অর্থভুবন প্রতিবেদক
তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণকর এ যুগে স্মার্টফোন একটি অত্যাবশ্যকীয় অনুষঙ্গ। স্মার্টফোনটি হারানো গেলে অথবা ভুল করে রেখে এলে সেসময় কতটা হেল্পলেস মনে হয় নিজেকে সেটা কল্পনা করা যায় না। এমনই ওতপ্রোতভাবে প্রযুক্তির এ আশীর্বাদ স্মার্টফোন আমাদের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে।
কত সালে স্মার্টফোন আবিষ্কৃত হয় : ১৯৯৪ সালে আইবিএম আর মিতসুবিসি ইলেকট্রিক কর্পোরেশন যৌথ উদ্যোগে তৈরি করেছিল বিশ্বের প্রথম স্মার্টফোন। তারা ফোনটির নাম দেয় সিমন। তাদের স্মার্টফোন বাজারে আসার ১৫ বছর পরে অ্যাপল আইফোন বাজারে আসে।
আকৃতি : সিমন বিশ্বের প্রথম স্মার্টফোন, যে ফোনে কোনো কি-প্যাড ছিল না। বর্তমান সময়ে বাজারে পাওয়া অভিনব স্মার্টফোনের মতোই টাচস্ক্রিনে ভেসে ওঠা নম্বরে আঙুল ছুঁইয়ে কল করতে হতো। ফোনটির দৈর্ঘ্য ছিল ৮ ইঞ্চি, চওড়ায় ২.৫ ইঞ্চি এবং ফোনটি ১.৫ ইঞ্চি পুরু ছিল। ওজন ছিল ৫০০ গ্রাম।
যেসব ফিচার ছিল : বিশ্বের প্রথম স্মার্টফোনের মেমরি ছিল মাত্র ১ এমবি। ফোনের ব্যাটারিও ছিল খুবই দুর্বল। কারণ একবার ফুল চার্জ দেয়ার পর মাত্র ১ ঘণ্টার ব্যাটারি ব্যাকআপ পাওয়া যেত। বর্তমান স্মার্টফোনের মতো অনেক ফিচার সিমনেও ছিল। ম্যাপিং, স্প্রেডশিট গেম, নোটপ্যাড, ফ্যাক্স এমনকি মেইল আদান-প্রদানও করা যেত এ স্মার্টফোনে।
কবে উন্মুক্ত হয় এবং দাম : ১৯৯৪ সালের ১৬ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রে উন্মুক্ত হয় সিমন। দাম ছিল ৮৯৯ ডলার। সে সময় এক বছরের মধ্যে মোট ৫০ হাজার ইউনিট সিমন বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু ১৯৯৫ সালেই এ ফোনের উৎপাদন বন্ধ করে দেয় আইবিএম আর মিতসুবিসি।
কোথায় পাওয়া যেত বিশ্বের প্রথম স্মার্টফোন : সিমন ফোনটি কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাওয়া যেত। সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের ১৫টি রাজ্যের টেলি নেটওয়ার্কের আওতায় এটি ব্যবহার করা যেত। এ বছরই স্মার্টফোন আত্মপ্রকাশের ২৫ বছর পূর্ণ হল। ২৫ বছর আগের সিমন স্মার্টফোনটি বর্তমানে লন্ডনের বিজ্ঞান জাদুঘরে রাখা হয়েছে।
স্মার্টফোনের বিবর্তন : প্রথমদিকে স্মার্টফোনগুলোর মূল লক্ষ্য ছিল এন্টারপ্রাইজ মার্কেট, পার্সোনাল ডিজিটাল অ্যাসিসট্যান্টের সুবিধাগুলো মুঠোফোনে আনতে চেয়েছিল। ২০০০ সালে, ব্ল্যাকবেরি, নকিয়ার সিম্বিয়ান প্ল্যাটফর্ম এবং উইন্ডোজ ফোন জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে। যদিও ২০০৭ সালে আইফোন মুক্তির পর থেকেই স্মার্টফোনগুলোতে পরিবর্তন আসতে থাকে, যার মধ্যে আছে বড় টাচ সেন্সিটিভ স্ক্রিন, মাল্টি টাচ জেসচার, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোডের সুবিধাসহ আরও অনেক কিছু।
২০১২ সালের তৃতীয়ার্ধ্বে বিশ্বব্যাপী ১০০ কোটি স্মার্টফোন ব্যবহারকারী রয়েছে এমন তথ্য জানা যায়। ২০১৩ সালের শুরুর দিকে স্মার্টফোনের এ জনপ্রিয়তায় ফিচার ফোনের বাজার ছোট হতে থাকে।
সর্বশেষ কয়েকটি স্মার্ট ফোন
আইফোন ১০এস ও ১০এস ম্যাক্স : বিশ্বের অন্যতম সেরা স্মার্টফোন বলা যায় অ্যাপলের এ ফোনকে। এ ফোনটির আগের ভার্শন আইফোন টেন থেকে প্রসেসর বাদে খুব বেশি আপডেট না থাকা সত্ত্বেও ফিচার ও চাকচিক্য দিয়ে অন্য যে কোনো স্মার্টফোন থেকে এটি এগিয়ে আছে। ফলে বিশ্বের সেরা স্মার্টফোন তালিকায় এটিকে ১ নম্বরে রাখাই যায়। এর শক্তিশালী দিক হচ্ছে এ১২ বায়োনিক চিপ যা লেটেস্ট অ্যান্ড্রয়েড ফ্ল্যাগশিপগুলোতে ব্যবহৃত স্ন্যাপড্রাগন ৮৪৫ চিপ থেকে বেশি শক্তিশালী। সঙ্গে প্রথমবারের মতো কোনো অ্যাপল ফোনে ডুয়াল সিম ক্যাপাবিলিটিও নিয়ে আসছে এটি।
স্যামসাং গ্যালাক্সি এস১০ ও এস১০+
বিশ্বের সেরা স্মার্টফোন তালিকায় স্যামসাং গ্যালাক্সি এস সিরিজ থাকা অত্যাবশ্যক! স্যামসাংয়ের এই লেটেস্ট ফ্ল্যাগশিপগুলো দেখতে খুবই চমৎকার। বিশেষ করে এদের ডিসপ্লেতে থাকা লেজার কাট ক্যামেরা হোলগুলো। স্ন্যাপড্রাগন ৮৫৫, ৮ জিবি র্যাম, ৫১২ জিবি স্টোরেজ আর সঙ্গে থাকছে ১২, ১২ ও ১৬ মেগাপিক্সেলের ট্রিপল ক্যামেরা আর সঙ্গে ১০ মেগাপিক্সেলের একটি সেলফি ক্যামেরাও।
হুয়াওয়ে পি৩০ প্রো ক্যামেরা বিবেচনায় এটিকে বিশ্বের সেরা স্মার্টফোন বলা যায়। বাজারের অন্যতম দ্রুতগতির প্রসেসর কিরিন ৯৮০ চিপসেট নিয়ে ৮ জিবি র্যাম, ৪২০০ মিলিঅ্যাম্প ব্যাটারি আর ৫১২ জিবি স্টোরেজ নেহায়েত সাধারণ মনে হলেও এর ক্যামেরাতেই থাকছে চমক।