বাণিজ্য ডেস্ক,অর্থভুবন
উচ্চসুদের হার, ক্রমবর্ধমান বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকিবিমুখতা এবং সাম্প্রতিক সময়ে বিপুল ঋণের কারণে বেশ কিছু উন্নয়নশীল দেশ ঋণ সংকটে আটকা পড়েছে। আগামী সপ্তাহে শুরু হতে যাওয়া মরক্কোর পর্যটনকেন্দ্র মারাকেচে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক বৈঠকে তাদের এ থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করা হবে মূল এজেন্ডা। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থাগুলো।
মিসর : উত্তর আফ্রিকার সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক দেশ মিসরের নগদ অর্থে ১০০ বিলিয়ন ডলারের ঋণ পরিশোধ করতে হবে আগামী পাঁচ বছরে।
ইথিওপিয়া : করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ইথিওপিয়ার অর্থনীতি।
ঘানা : ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের কারণে ২০২২ সালে বেশির ভাগ বিদেশি ঋণের ক্ষেত্রে খেলাপি হয়ে পড়ে ঘানা।
কেনিয়া : পূর্ব আফ্রিকান দেশ কেনিয়ার সরকারি ঋণ ২০২২ সাল শেষে দাঁড়িয়েছে জিডিপির ৬৭.৪ শতাংশ। বিশ্বব্যাংক দেশটিকে ঋণ সংকটের কারণে উচ্চঝুঁকিতে রেখেছে।
লেবানন : ২০২০ সাল থেকেই ঋণখেলাপির তালিকায় লেবানন। যদিও আর্থিক সংকট কাটাতে দেশটির কিছু চেষ্টা দৃশ্যমান। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কিছু সংস্কারকে স্বাগত জানিয়েছে আইএমএফ, যার মধ্যে অন্যতম একটি বিতর্কিত এক্সচেঞ্জ প্ল্যাটফরম প্রত্যাহার করে নেওয়া এবং সরকারের অর্থায়ন নিয়ন্ত্রণ। কিন্তু আইএমএফ বলছে, দেশটির দুর্দশা ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি উত্তরণে আরো গভীর সংস্কার প্রয়োজন। যদি বর্তমান অবস্থা চলমান থাকে তবে দেশটির সরকারি ঋণ জিডিপির ৫৪৭ শতাংশে পৌঁছাতে পারে ২০২৭ সাল নাগাদ।
পাকিস্তান : পাকিস্তানের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ অব্যাহত রাখা এবং ২০২৪ সালে ব্যয় নির্বাহে ২২ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত প্রয়োজন। দেশটিতে মূল্যস্ফীতি ও সুদের হার ঐতিহাসিক উচ্চতায় উঠেছে, এ অবস্থায় ২০২২ সালের বন্যা-পরবর্তী পুনরুদ্ধারেও দেশটি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। গত জুনে দেশটি আইএমএফের সঙ্গে তিন বিলিয়ন ডলারের ঋণচুক্তি করেছে। এর পাশাপাশি সৌদি আরব ও ইউএই মিলে আরো তিন বিলিয়ন ডলার নগদ দিয়েছে।
শ্রীলঙ্কা : করোনা মহামারিতে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় পর্যটননির্ভর শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি। এর ফলে দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে নামে। খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের মতো অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আমদানিতেও হিমশিম খেতে হয়। এতে ২০২২ সালের মে মাসে বৈদেশিক ঋণে দেউলিয়া হয়ে পড়ে শ্রীলঙ্কা। দেশজুড়ে বিদ্যুত্সংকট, রেকর্ড মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় মানুষ রাস্তায় বিক্ষোভে নামে। পরবর্তী সময়ে আইএমএফের ২.৯ বিলিয়ন ডলারের বেইলআউট ঋণ ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংস্কার পরিকল্পনায় আবার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে দেশটি।
এ দেশটি ছাড়াও উত্তর আফ্রিকার দেশ তিউনিশিয়া, ইউরোপের দেশ ইউক্রেন এবং আফ্রিকার জাম্বিয়াসহ আরো বেশ কিছু দেশ ঋণ সংকটে রয়েছে।
সূত্র : রয়টার্স