একসময় বাদুড় ছিল বেশ দাপুটে প্রাণী। নিজেকে নিয়ে অনেক অহংকারও ছিল তার। একদিন সে উড়ে উড়ে এক জঙ্গলে চলে এলো। বাহ, দারুণ জায়গা তো! এই বনটা খুবই পছন্দ হলো বাদুড়ের।
কী সুন্দর জায়গা! আহ, সব আমি পষ্ট দেখতে পাচ্ছি! এই বন হবে শুধুই আমার। এখানকার সব জীবজন্তুকে আমি মেরে ফেলব। তারপর গোটা বনটাই হবে আমার একলার।
এই কথাটা শুনে ফেলল শজারু। শুনে ভীষণ ভয় পেয়ে গেল। এক ছুটে চলে গেল হাতির কাছে।
পরের দিন সব জীবজন্তু এক সভায় বসল। সবাই ভীষণ উদ্বিগ্ন। বিরাট সমস্যা হয়েছে। ভিনদেশি শয়তান বাদুড়টাকে কিভাবে ঠেকানো যায়, তার একটা বিহিত করা লাগে। ভেবেচিন্তে শিয়াল এক বুদ্ধি দেয়। বলে,
ওই দস্যিটার চোখজোড়া ফুটো করে দিতে হবে, যেন সে ভালোমতো দেখতে না পায়। এক কাজ করো দেখি। ভোজের একটা আয়োজন করো। ওই বদমাশ বাদুড়কে সেখানে দাওয়াত দাও। যা করার শজারু করবে। ওর গায়ে ধারালো কাঁটা আছে। সেটাই অস্ত্র। কী শজারু, এই কাজটা করতে পারবে না তুমি?
শজারু মাথা নাড়ে। পারবে সে। পারতেই হবে।
তা-ই করা হলো। প্ল্যানমতো। মজার মজার খানাদানার আয়োজন করা হয়েছে। অতিথি হিসেবে সেখানে এসেছে বাদুড়। যখন সে খানাপিনায় ব্যস্ত, হঠাৎই শজারু হামলা করল তার ওপর। দুই চোখে ধারালো কাঁটা বিঁধিয়ে দিল। বাদুড় পড়িমরি করে ছুটে গেল। সে কোনোমতে পালিয়ে বাঁচল। এর মধ্যে তার চোখের বেশ ভালো রকমের ক্ষতি হয়ে গেছে।
পুরো অন্ধ সে হয়নি। কবিরাজ লতাপাতা বেটে ওষুধ দিল। ওষুধ কিছুটা কাজ করেছে। বাদুড় এখন আর আগের মতো পষ্ট দেখতে পায় না। সহ্য করতে পারে না দিনের আলো। একেবারেই না। রাতের অন্ধকারে আবছা আবছা দেখতে পায়।
ওই ঘটনার পর থেকে দিনের বেলায় বাদুড় আর বের হয় না। খুব অস্বস্তি হয় যে সে কারণে।
বনের জীবজন্তুরা হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে।