পৃথিবীর যেকোনো ব্যক্তি ও মনীষীর জীবনচরিত থেকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনচরিত সম্পূর্ণ ভিন্ন। কেননা তা এমন অনন্য বৈশিষ্ট্যের অধিকারী, যা পৃথিবীর অন্য কোনো ব্যক্তির জীবনচরিতে খুঁজে পাওয়া যায় না। নবীজি (সা.)-এর সিরাত বা জীবনচরিত জ্ঞানভিত্তিক, সুবিন্যস্ত, সুপ্রমাণিত, জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে পরিপূর্ণ। তা এমন একটি জীবনচরিত, যেখানে মহানবী (সা.)-এর পুরো জীবনকালকে দৃশ্যমান করে তোলা হয়েছে।
মহানবী মুহাম্মদ (সা.) এই নশ্বর পৃথিবীতে এমনভাবে জীবনযাপন করেছেন, যার মাধ্যমে ইসলামী ধর্ম জীবন লাভ করেছে, কোরআনের মর্ম স্পষ্ট হয়েছে এবং ইসলামী মূল্যবোধের ব্যাপারে মানুষের ভ্রান্ত ধারণা দূর হয়েছে। তাঁর জীবনই ছিল কোরআনের নির্ভুল বাস্তবায়ন। এ জন্য আয়েশা (রা.)-কে নবীজি (সা.)-এর স্বভাব-চরিত্র সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, কোরআনই ছিল স্বভাব।
নবীজি (সা.)-এর শিক্ষাই মানবজাতির জন্য সর্বোত্তম শিক্ষা। কেননা স্বয়ং আল্লাহ তাঁকে উত্তম শিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন।
অনুগ্রহস্বরূপ। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ মুমিনদের প্রতি অবশ্যই অনুগ্রহ করেছেন যে তিনি তাদের নিজেদের মধ্য থেকে তাদের কাছে রাসুল প্রেরণ করেছেন, যে তাঁর আয়াতগুলো তাদের কাছে তিলাওয়াত করে, তাদেরকে পরিশোধন করে এবং কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেয়, যদিও তারা আগে স্পষ্ট বিভ্রান্তিতেই ছিল।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৬৪)
মানব ইতিহাসে এমন বিশ্বস্ত, বিন্যস্ত ও বিস্তৃত জীবন ইতিহাসের দ্বিতীয় কোনো দৃষ্টান্ত নেই। পৃথিবীর অন্য কোনো মানুষের জীবন এভাবে সংরক্ষণ করা হয়নি, যেভাবে মহানবী (সা.)-এর জীবনচরিত সংরক্ষণ করা হয়েছে।