ক্রীড়া ডেস্ক,অর্থভুবন
ক্রিকেটের বৈশিক আসরে অন্যতম সফল দল অস্ট্রেলিয়া। ওয়ানডে বিশ্বকাপে রেকর্ড পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন তারা। সংখ্যাটাকে ছয়ে উন্নীত করার আশায় এখন ভারতে লড়ছে অজিরা। শুরুটা ভালো না হলেও বর্তমানে স্বরূপেই আছে দলটি। দাপুটে পারফরম্যান্সে টানা সাত ম্যাচ জিতে তারা নাম তুলেছে সেমিফাইনালে, সেখানে আজ তাদের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা। চলতি আসরে প্রোটিয়ারাও খেলছে দুর্দান্ত ক্রিকেট। ব্যাট-বলে অপ্রতিরোধ্যই দেখাচ্ছে টেম্বা বাভুমার দলকে। বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার এমন রূপ অবশ্য নতুন নয়, কিন্তু বড় ম্যাচে খেই হারানোর রোগ আছে তাদের। অন্যদিকে বড় ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া বরাবরই দুর্দান্ত, সেটাই বাড়তি আত্মবিশ্বাস দিচ্ছে কামিন্সকে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সাম্প্রতিক অতীত অবশ্য সুখকর নয় অস্ট্রেলিয়ার। ১২ অক্টোবর লিগপর্বের দেখায় ১৩৪ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে তারা। এর আগে সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়ে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ জিতলেও শেষ ম্যাচে হেরে বসে কামিন্সের দল। কিন্তু লড়াইটা যখন বিশ্বমঞ্চের নকআউটে, অস্ট্রেলিয়া তখন অন্যরকম এক দল। প্রোটিয়াদের চিত্র আবার বিপরীত। এখন পর্যন্ত সেমির বাধা পার হতে পারেনি তারা। চাপের ম্যাচে হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ার রোগ আছে প্রোটিয়াদের। ক্রিকেটে তাই ‘চোকার্স’ নামেই পরিচিত দলটি। যে কারণে আজকের লড়াইয়ে কিছুটা হলেও পিছিয়ে তারা।
অন্যদিকে অভিজ্ঞতা এগিয়ে রাখছে অস্ট্রেলিয়াকে। ২০১৫ সালে শেষবার যখন বিশ্বকাপ জেতে তারা সেই দলে ছিলেন-কামিন্স, ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভ স্মিথ, মিচেল মার্শ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মিচেল স্টার্ক এবং জস হ্যাজলউড। দুই বছর আগে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী দলেও তারা ছিলেন। তাই বড় মঞ্চে চাপের ম্যাচ কীভাবে জিততে হয়, এই অস্ট্রেলিয়াও তা ভালো করেই জানে। অধিনায়ক কামিন্স তাই বলে দিলেন, ‘এই দলের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার একসঙ্গে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছে, এটি আমাদের সহায়তা করবে। এ ছাড়া বেশ কিছু বড় ম্যাচে আমরা মাঠে একসঙ্গে লড়াই করেছি। ওদেরও (দক্ষিণ আফ্রিকা) আমরা খুব ভালোভাবে জানি, অনেক ম্যাচ খেলেছি তাদের বিপক্ষে।’
অস্ট্রেলিয়া আর দক্ষিণ আফ্রিকা যখন নকআউট ম্যাচে মুখোমুখি, তখন সামনে আসছে এজবাস্টনে ১৯৯৯ বিশ্বকাপের টাই হওয়া সেই সেমিফাইনাল। শেষবেলায় তালগোল পাকিয়ে নিশ্চিত জয় হাতছাড়া করেছিল প্রোটিয়ারা। তাতে সেমিফাইনাল না জিতেও গ্রুপপর্বে নেট রানরেটে এগিয়ে থাকার সুবিধা নিয়ে ফাইনালে পৌঁছে যায় অস্ট্রেলিয়া। সেই ম্যাচটির প্রসঙ্গও এলো বুধবার কামিন্সের সংবাদ সম্মেলনে। অজি দলপতি বলেন, ‘এটা একরকম লোককাহিনির মতো। আমি অনেকবার সেই ম্যাচের ভিডিও দেখেছি, গল্প শুনেছি। তবে আগামীকালের (আজ) ম্যাচে সেরকম কিছু হবে না। এই দক্ষিণ আফ্রিকা ভিন্ন এক সমন্বয়ে গঠিত। তবে হ্যাঁ, এসব গল্প, ইতিহাস আমাদের প্রেরণা দেয়। কিন্তু মাঠে আমাদের সেরাটাই খেলে জিততে হবে।’
স্টিভ স্মিথ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েলরা ফিট হয়ে উঠায় সেরা দল নিয়ে সেরাটা খেলার আশা রাখতেই পারেন কামিন্স। আফগানিস্তানের বিপক্ষে কয়েক দিন আগে পাওয়া অবিশ্বাস্য জয়ের নায়ক ম্যাক্সওয়েলকে পেয়ে অজি দলপতি যেন একটু বেশিই আনন্দিত, ‘তার মতো ক্রিকেটার যে দলে থাকবে সেই দলেরই বাড়তি সুবিধা। তার উপস্থিতি বাড়তি শক্তি হিসেবে কাজ করে। আমরা যেকোনো অবস্থান থেকে ম্যাচ বের করে আনতে পারব, এমন আত্মবিশ্বাস থাকে। ম্যাক্সি একজন সুপারস্টার।’